শিশুদের এমন জটিল প্রশ্নের হটাৎ সম্মুখীন হলে এর উত্তর দেওয়াটা বেশ কঠিন। কিন্তু শিশুর উপযোগী করে এর জবাব প্রদান করাটাও যে তার সৃজনশীল মনের বিকাশের জন্য খুবই জরুরি। আর তাই আমরা বাচ্চাদের করা ২০০ প্রশ্ন থেকে বাছাই করে এমন ৫০টি প্রশ্ন ও এর শিশু উপযোগী উত্তর সংবলিত করেছি “পালাবেন না ছোটদের প্রশ্ন থেকে” বইটিতে।
ভালো বাবা কীভাবে হবেন:
একজন ভালো বাবা হতে হলে এবং বাবা হিসাবে সফলতা পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই সন্তান প্রতিপালনের ভুল অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সঠিক পন্থা প্রয়োগ এবং ভুল অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞার বিকল্প নেই। আপনি যদি সন্তান প্রতিপালনের ভুল অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে চান, সন্তানদের নিরাপদ জীবন কামনা করেন, তাদের উত্তম সাহচর্য প্রদান করতে চান, সন্তান প্রতিপালনে আদর্শ বাবা হতে চান, তাহলে আপনাকে কিছু উপকরণ বা মাধ্যম গ্রহণ করতে হবে। কী মাধ্যম বা উপকরণ গ্রহণ করলে ভালো বাবা হওয়া যাবে সেই আলোচনাই করা হয়েছে এই বইয়ে।
আপনার সন্তানকে কেন গল্প শোনাবেন:
‘মা-বাবার কাছ থেকে সুন্দর সুন্দর গল্প শোনার মাধ্যমে শিশুর নৈতিক শিক্ষা অর্জন।’ অথচ আমরা একেবারেই ভুলে গিয়েছি শিশুদের শিক্ষার এই অধ্যায়টির কথা। প্রযুক্তির লাগামহীন ব্যবহার যেন আমাদের থেকে কেড়ে নিচ্ছে রাতে ঘুমানোর আগে সন্তানকে গল্প শোনানোর এই রেওয়াজ । ডিভাইসে বিভোর বাবা-মায়ের কাছ থেকে এই গল্প বলার রেওয়াজ যেন ধীরে ধীরে বিদায় নিচ্ছে। ফলে শিক্ষার এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।
আর তাই শিশুদের নীতিশিক্ষার এই রেওয়াজটি ফিরিয়ে আনতে আমাদের একটি ছোট্ট প্রয়াস “আপনার সন্তানকে কেন গল্প শোনাবেন?” সন্তানকে কেন গল্প শোনাবেন, কেমন গল্প শোনাবেন, কখন গল্প শোনাবেন, কীভাবে গল্প শোনাবেন ইত্যাদি বিষয় আলোচনা করেছি এই বইয়ে।
কীভাবে পাবেন একান্ত অনুগত সন্তান:
ধরুন, আপনার হাতে একটি রিমোটকন্ট্রোল আছে। এই রিমোটের মাধ্যমে আপনি আপনার সন্তানকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। কিন্তু একবারও কি ভেবেছেন, যখন আপনার সন্তান এই কাল্পনিক রিমোটের কন্ট্রোল এরিয়ার বাইরে থাকবে, তখন তাকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন? তখন কি আপনার পক্ষে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে? তখন কি রিমোটের মাধ্যমে বাইরের মন্দ বিষয় থেকে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন?
তাহলে সন্তানকে কীভাবে পরিচালনা করবেন? কী করলে সন্তান আপনার অনুগত হবে। এই আলোচনা করা হয়েছে বইটিতে। বইটি পড়ে আপনি পেয়ে যাবেন একজন অনুগত সন্তানের রূপরেখা।
যেভাবে গড়বেন দায়িত্বশীল সন্তান:
শ্রদ্ধেয় অভিভাবক!
আপনার এখন বয়স কম। সকল কাজই আপনি এখন করতে পারেন। সন্তানদের সকল দায়িত্ব আপনি একাই সামলাতে পারেন। কিন্তু আপনার যখন বয়স হবে? আপনি যখন বৃদ্ধ হয়ে যাবেন? তখন কি আপনি এখনের মতো সকল কাজ করতে পারবেন? পারবেন না। তখনও কি আপনি সন্তানদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন? পারবেন না। তাহলে তখন আপনাকে কে সাহায্য করবে?
বাস্তব অভিজ্ঞতা বলে, সন্তানকে শৈশবেই শেখানো না হলে, বড় হয়ে তারা বাবা-মার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় না। সুতরাং আমরা যদি বার্ধক্যের সময়টা ভালোভাবে কাটাতে চাই, সে সময়টা যদি আমরা আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করতে চাই, তাহলে আমাদের উচিত; এখন থেকেই সন্তানদের দায়িত্বশীল হিসেবে গড়ে তোলা।