পাকিস্তানের সংসদে ট্রান্সজেন্ডার অ্যাক্ট চূড়ান্তভাবে ২০১৮ সালে পাশ হয়। ট্রান্সজেন্ডার অধিকার রক্ষার এই আইনের পুরো প্রসেস অত্যন্ত সংগোপনে আঞ্জাম দেয়া হয়। জাতিসংঘ ও তাদের ফান্ডে পরিচালিত স্থানীয় এনজিওগুলো ট্রান্সজেন্ডার আইনটি পাশ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কাজ করে গেছে। পাকিস্তানে ট্রান্সজেন্ডার আইন পাশ হওয়ার পর সব মহল থেকে এই ব্যাপারে নানাপ্রকার আলোচনা ও সমালোচনা চলমান থাকে। সে সময় বিভিন্ন দারুল ইফতা ও আহলে ইলমদের কাছেও এই সম্পর্কে নানা প্রশ্ন জমা হতে থাকে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে জামিয়া দারুল উলূম করাচীতেও মুফতী তাকী উসমানী হাফিযাহুল্লাহর কাছে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে একাধিকবার প্রশ্ন আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তৎক্ষণাৎ জামিয়ার ইফতা বিভাগ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ফতোয়া জারি করা হয় তাকী উসমানী সাহেবের দস্তখতসহ। কিন্তু পুরো দেশে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুকে হিজড়া, খোজা ইত্যাদি গোষ্ঠীর সাথে মিলিয়ে একটি অস্পষ্ট অবস্থা তৈরি করা হয়।
তখন আল্লামা তাকী উসমানী হাফিযাহুল্লাহ জামিয়ার দারুত তাসনীফের সহকারী মুফতী ফিদাউল্লাহ হাফিযাহুল্লাহকে এই বিষয়ে একটি বিস্তারিত গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রস্তুত করতে বলেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই মুফতী ফিদাউল্লাহ সাহেব “তাগয়িরে জিনস কা মাসআলা” নামে একটি গবেষণাধর্মী রিসালা তৈরি করেন। আমাদের এই বইটি তারই বাংলা অনুবাদ। মুহতারাম লেখক বইটিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের অপারেশনের বিধান, হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডারের মধ্যকার পার্থক্য, লিঙ্গ নির্ধারণের মানদণ্ড ও মানবসমাজের লিঙ্গের প্রকার ইত্যাদি মৌলিক বিষয় নিয়ে ফিকহ ও চিকিৎসা-শাস্ত্রের দৃষ্টিতে সারগর্ভ আলোচনা তুলে ধরেন। কোনো মুসলমান এই মৌলিক বিষয়গুলো বুঝতে পারলে কখনোই ট্রান্সজেন্ডার মতবাদকে সমর্থন করবে না। পাশাপাশি তার কাছে ট্রান্সজেন্ডার আন্দোলনের ফাঁকফোকর ও অসারতাও স্পষ্ট হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।